ইউটিউব ইনকাম হালাল নাকি হারাম বিস্তারিত জানুন

প্রিয় পাঠক, আশা করছি আপনি ভালো আছেন। আপনি যেহেতু জানতে চেয়েছেন যে ইউটিউব ইনকাম হালাল নাকি হারাম? আমরা বিভিন্ন সময় অনলাইনে ভিডিও দেখে থাকি এবং ইউটিউব থেকে উপার্জিত অর্থ হারাম কিংবা হালাল এ বিষয় নিয়ে অনেক বিতর্কিত বিষয়ে রয়েছে। কিন্তু আপনি হয়তো এর সঠিক উত্তর সম্পর্কে জানেন না তাই সার্চ করে এ পর্যন্ত এসেছেন। তাই আপনি যদি এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পুরোপুরি পড়েন সে ক্ষেত্রে আশা করছি আপনি উত্তরটি পেয়ে যাবেন এবং নিরাশ হবেন না। 

ইউটিউব ইনকাম হালাল নাকি হারাম

বর্তমানে ইউটিউব থেকে মানুষ লক্ষাধিক টাকা ইনকাম করে। আর আমাদের দেশ যেহেতু একটি মুসলিম দেশ সেক্ষেত্রে সে সকল ইনকামের পিছনেও আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করি যে এই ইনকাম হারাম নাকি হালাল কেননা মুসলিমদের জন্য হারাম নিষিদ্ধ যা আল্লাহ পাক হইতে বলা হয়েছে।তাই আমরা হারাম অর্থ উপার্জন করতে গিয়ে দ্বিধার সম্মুখীন হয়। এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা ইউটিউব থেকে উপার্জিত অর্থ হারাম নাকি হালাল সে সম্পর্কে জানবো এবং ইউটিউব সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন তথ্য নিয়ে আলোচনা করব। 

পেজ সূচিপত্রঃ 

 ইউটিউব এর অর্থ কি?

ইউটিউব থেকে উপার্জিত অর্থ হারাম হালাল জানার আগে চলুন আমরা জেনে আসি যে আসলে ইউটিউব টা কি? ইউটিউব হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউটিউব এর যাত্রা শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া শহর থেকে। এবং এর সহপ্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশের একজন গর্বিত সন্তান জাভেদ করিম। তাহলে ইউটিউব অর্থ দাঁড়ায় যে, ভিডিও শেয়ার করা বা আদান প্রদান করার একটি মাধ্যম। 

ইউটিউব কিভাবে টাকা দেয়?

চলুন এখন আমরা জানার চেষ্টা করি যে ইউটিউব আমাদের কিভাবে টাকা দেয়। বা ইউটিউবের যে সকল কন্টেন ক্রিয়েটার রয়েছে তাদেরকে ইউটিউব কিভাবে অর্থ প্রদান করে থাকে। ইউটিউব অর্থ প্রদান করার ক্ষেত্রে যে বিষয়টিকে খেয়াল রাখে সেটি হচ্ছে আপনার যে কনটেন্ট বা ভিডিও সেখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ড অথবা কোম্পানির প্রচারণা অ্যাডস চালিয়ে থাকে এবং সে সকল কোম্পানি থেকে প্রাপ্ত অর্থ এর কিছু অংশ ইউটিউব এর কন্টেন্ট ক্রিকেটারদের দিয়ে থাকে। সেটাকে সাধারণত এডসেন্স ইনকাম বলা হয়। এর জন্য কিছু শর্তাবলী পূরণ করতে হয়। 

আরো পড়ুনঃ  ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন এর জন্য কি প্রয়োজন

আপনারও যদি একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকে এবং আপনি সেই সকল শর্তগুলো পূরণ করতে পারেন তাহলে আপনিও ইউটিউব থেকে একটি মানসম্মত অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হবেন। তার জন্য আপনাকে এক হাজার সাবস্ক্রাইবার এবং ৩০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম এর মাইলস্টন পূর্ণ করতে হবে। তারপর আপনাকে একটি এডসেন্স একাউন্ট খুলে সেটার সাথে কানেক্ট করে মনিটাইজেশন এর জন্য আবেদন করতে হবে। এর পরবর্তী ধাপে আপনি মনিটাইজেশন পাওয়ার সাথে সাথেই আপনার ভিডিওগুলোতে এড চালু করে দিতে হবে। এবং সেখান থেকে উপার্জিত অর্থ আপনার এডসেন্স একাউন্টে জমা হবে এবং এডসেন্স একাউন্টের সাথে ব্যাংক যুক্ত করার মাধ্যমে আপনি সেখান থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

ইউটিউবে কিভাবে সফল হওয়া যায়

চলুন এখন আমরা আলোচনা করার চেষ্টা করি যে কিভাবে আপনি ইউটিউবে সফল হবেন এবং ইউটিউব এ সফল হওয়ার মূলমন্ত্র কি? ইউটিউবে সফল হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভুমিকা রাখে সেটি হচ্ছে নিয়মানুবর্তিতা বজায় রাখা। আপনি যদি প্রতিদিন নিয়ম করে ইউটিউবে আপনার কনটেন্ট আপলোড করতে থাকেন সেক্ষেত্রে কোন না কোন দিন সে ভিডিও ভাইরাল হবে এবং সেখান থেকে আপনি সফলতা অর্জন করবেন। এবং ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম কানুন আপনাকে মেনে চলতে হবে। কিওয়ার্ড, টাইটেল, ডেস্ক্রিপশন ইত্যাদি রিসার্চ করার মাধ্যমে আপনার ভিডিওকে ভাইরাল করতে পারলেই আপনি এখান থেকে সফল হতে পারবেন। 

আরো পড়ুনঃ কিভাবে ইউটিউবে ভিডিও এসইও SEO করতে হয়

এছাড়া আকর্ষণীয় থাম্নেইল আপনার ভিডিওতে অধিক ভিউ এনে দেওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখবে। আর চ্যানেল এর কিছু সেটিং হালনাগাদ করতে হবে এবং আপনি কোন ক্যাটাগরির ভিডিও ছাড়তেছেন সে সকল বিষয়ের ক্যাটাগরি নির্ধারণ করে সেই ক্যাটাগরির ভিডিও আপনাকে প্রতিনিয়ত আপলোড করতে হবে। তাহলে আশা করছি আপনার সফলতার বাধা হয়ে আর কেউ দাঁড়াতে পারবেনা।

ইউটিউব ইনকাম হালাল নাকি হারাম 

চলুন এখন আমরা মূল আলোচনা করি যে ইউটিউব থেকে উপার্জিত অর্থ হারাম নাকি হালাল ? যেহেতু ইউটিউব অর্থ প্রদান করে তার এড থেকে বা বিজ্ঞাপন থেকে সেহেতু আমরা বলতেই পারি যে বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন আপনার ভিডিওতে দেওয়ার মাধ্যমে যে ইনকাম হবে সেটি অবশ্যই হালাল।সেক্ষেত্রে দৃষ্টি রাখতে হবে যে আপনার ভিডিওতে কোন ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে সেই সকল বিজ্ঞাপন যদি ইসলামী পরিপন্থী হয় তাহলে সেটি অবশ্যই হালাল। কিন্তু যদি এমন কোন বিজ্ঞাপন আপনার ভিডিওতে প্রচার করা হয় যেগুলো বিভিন্ন জুয়া এবং খারাপ দৃশ্যপট নির্দেশ করে তাহলে সেই অর্জিত অর্থ অবশ্যই হারাম বলে বিবেচিত হবে। তাই ইউটিউব থেকে উপার্জিত অর্থ হারাম কি হালাল হবে এ বিষয়টি পরিপূর্ণ ইউটিউব অ্যাডস এর উপর নির্ভর করে। আশা করছি আপনি বুঝতে পেরেছেন যে ইউটিউব থেকে ইনকাম করা হালাল নাকি হারাম।  

ইউটিউব থেকে প্রতি মাসে কত টাকা ইনকাম করা সম্ভব 

চলুন আমরা এখন আলোচনা করি যে ইউটিউব থেকে প্রতি মাসে কত টাকা ইনকাম করা সম্ভব। বা বাংলাদেশী বিভিন্ন কনটেন্ট নির্মাতারা প্রতিমাসে কত টাকা ইনকাম করতেছে। আর ইউটিউব ইনকাম সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার ভিডিওর উপর আপনি যদি যুক্তরাষ্ট্রের অডিয়েন্সগুলোকে টার্গেট করে ইংরেজি ভিডিও বানান সেক্ষেত্রে অল্প ভিউ আপনার দ্বিগুণ ইনকাম হবে। যেহেতু বাংলাদেশে এডস এর রেট খুবই কম তারপরেও একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় যে বাংলাদেশের কনটেন্ট নির্মাতারা ঘরে প্রতি মাসে প্রায় ৩ থেকে ৫ লক্ষ টাকা ইনকাম করে থাকে। 

আশা করছি আপনি ইউটিউব ইনকাম হালাল নাকি হারাম এবং ইউটিউব থেকে প্রতি মাসে কত টাকা ইনকাম করা সম্ভব এবং ইউটিউব সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে অবগত হয়ে খুশি হয়েছেন তাই পোস্টটি অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না ধন্যবাদ।  

আরো পড়ুনঃ  কিভাবে একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুলবো 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url