প্রিন্টিং বিজনেস কি এবং প্রিন্টিং বিজনেস কিভাবে করতে হয়

প্রিন্টিং বিজনেস কি এবং প্রিন্টিং বিজনেস কিভাবে করতে হয় এ বিষয়ে আপনি যদি আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আপনি যদি এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে করেন আশা করছি আপনার মনে কোন রকম আর কোন কনফিউশন থাকবে না এই বিজনেস নিয়ে। আসলে প্রিন্টিং বিজনেস কিভাবে করবেন বা কোথা থেকে শুরু করবেন বা আপনার জন্য কি করা উচিত সব বিষয়ে নিয়ে আজকে আলোচনা করব। তাই এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। 

প্রিন্টিং বিজনেস কি এবং প্রিন্টিং বিজনেস কিভাবে করতে হয়

বর্তমান যুগে বাস করে কিন্তু প্রিন্টিং বিজনেস সম্পর্কে জানা না এমন মানুষ পাওয়া খুবই দুষ্কর। তাই আপনি যদি প্রিন্টিং বিজনেস সম্পর্কে একদম কোন বিষয়েই না জানেন তারপরেও কোন সমস্যা নেই দয়া করে পোস্টে মনোযোগ সহকারে করার মাধ্যমে আপনি প্রিন্টিং বিজনেস সম্পর্কে সচেতন হোন এবং এ বিষয়ে আগ্রহী থাকলে বিজনেস কিভাবে করতে হয় সে বিষয়ে আলোচনা করা যায়। কিন্তু আলোচনার পূর্বে আমরা জেনে নিই যে এই পুরো পোস্ট জুড়ে আমরা কি কি বিষয় সম্পর্কে জানব তার একটি সূচি পত্র। 

পোস্ট সূচিপত্রঃ 

প্রিন্টিং বিজনেস বা প্রিন্ট অন ডিমান্ড কি

বর্তমানে এই অনলাইন যুগে প্রিন্ট অন ডিমান্ড এর বিজনেস খুব জনপ্রিয়। আপনি আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী বা আপনার পছন্দের ডিজাইন আপনার টি শার্ট কিংবা আপনার পছন্দ কোন জিনিসের উপর হতে পারে সেটা মগ বা ক্যাপ অথবা ডাইরি কিংবা ব্যাগ ইত্যাদির উপর নিজের চাহিদা অনুযায়ী এবং নিজের পছন্দের ডিজাইন অনুসারে যে প্রিন্ট করা হয় সেটাই হচ্ছে প্রিন্ট অন ডিমান্ড বা পেন্টিং বিজনেস। আর প্রিন্টিং বিজনেস সম্পর্কে যদি আমরা একটি প্রত্যক্ষ ধারণা রাখার চেষ্টা করি তাহলে এক কথায় বলবো যে কাস্টমারের চাহিদার উপর নির্ভর করে নিজস্ব ডিজাইন বা সৃজনশীল তাকে ফুটিয়ে তুলে তাদের কাছেই উপস্থাপন করা এবং এতে কাস্টমারের পছন্দ অনুযায়ী বা তাদের ডিমান্ড অনুযায়ী সে তার নিজের পণ্য ব্যবহার করতে পারবে। 

প্রিন্টিং বিজনেস কিভাবে করতে হয়

চলুন এখন আমরা আলোচনা করতে বিজনেস কিভাবে করতে হয় বা আপনি প্রাথমিক অবস্থায় প্রিন্টিং বিজনেস শুরু করার জন্য আপনার কি কি করনীয় অবলম্বন করতে হবে। প্রথমত সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আপনি কি ধরনের পেন্টিং বিজনেস করতে চান। আচ্ছা মনে করুন আমি ধরে নিচ্ছি আপনি টি শার্ট প্রিন্টিং এর বিজনেস করতে চান। তাহলে সেই অনুযায়ী আপনাকে একটি ক্যাটাগরি পছন্দ করে নিতে হবে যেমন টি শার্ট প্রিন্টিং। এক্ষেত্রে আপনাকে যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য রাখতে হবে যে আপনি যে কাপড় কিনবেন বা কোথা থেকে কিনছেন সেখান থেকে প্রতারিত হলে আপনি বিজনেসের প্রাথমিক অবস্থায় অনেক ভেঙ্গে পড়বেন। তাই বিশ্বস্ত দোকান থেকে আপনি কাপড় সংগ্রহ করুন এবং সেখানেই তাদের সাথে একটি পার্টনারশিপ তৈরি করে আপনার বিজনেসকে এগিয়ে নিন। 

আরো পড়ুনঃ ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন এর জন্য কি প্রয়োজন

তারপর আপনি সলিড কালার টি শার্ট সংগ্রহ করার পর একজন দক্ষ টি শার্ট ডিজাইনার কে দিয়ে আপনি বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন করতে পারেন এবং ভাইরাল কনটেন্ট নিয়ে কাজ করতে পারেন। আর সেক্ষেত্রে আপনি যদি নিজেই টি শার্ট ডিজাইন করতে পারেন তাহলে তো খুবই ভালো হয়। আপনার নিজের কাজ আপনি যদি নিজে করেন সে ক্ষেত্রে আপনার সাথে আর কেউ পারবেনা আশা করি। টি শার্ট পেন্টিং এরপর সেগুলোকে মার্কেটিং করার পালা। এবং আপনি যদি যথাযথভাবে আপনার প্রিন্ট বা ডিজাইনকে মার্কেটিং করতে পারেন সে ক্ষেত্রে আশা করছি আপনি কাস্টমার এর অভাব কখনোই ভোগ করতে হবে না। আপনার কাজ শেষ হওয়ার আগেই আপনার কাছে থেকে প্রোডাক্ট শেষ হয়ে যাবে। তাই প্রিন্টিং বিজনেস এর ক্ষেত্রে মার্কেটিং বিষয়টা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর মার্কেটিংয়ে নির্ভর করে আপনি কতটুকু বিজনেসে লাভবান হবেন বা কতটুকু বিজনেসে ক্যারিয়ার করতে পারবেন। 

বর্তমানে পেন্টিং বিজনেসের চাহিদা কেমন

বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ সে ক্ষেত্রে বর্তমান প্রিন্টিং বিজনেসের চাহিদা কেমন এ প্রসঙ্গে আলোচনা করার পূর্বে আমি বলে নিচ্ছি যে আপনার চতুর্দিকে তাকালে দেখবেন যে স্মার্টফোন ব্যবহার করেন না এমন মানুষ পাওয়া দুর্লভ। আর আরেকটি বিষয় খেয়াল করে দেখবেন যে দিনের পর দিন যাচ্ছে কিন্তু স্মার্টফোন ব্যবহারকারী কখনোই কমছে না বরং বাড়তেছে। এবং মানুষ পূর্বের তুলনায় আরো শিক্ষিত হচ্ছে এবং স্মার্ট ভাবে জীবন যাপন পরিচালনার ক্ষেত্রে অনলাইন থেকে বেশিরভাগ পণ্য কেনাকাটা করে থাকে। আর বর্তমানে প্রিন্টিং বিজনেসের চাহিদা ব্যাপক কেননা মানুষ বিভিন্ন উদযাপন এবং অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব ডিজাইন দিয়ে বিভিন্ন টি-শার্ট নিয়ে থাকে এবং তাদের অনুষ্ঠানগুলোকে আরো যথাযথ পরিপূর্ণতা দান করে থাকে। 

আরও পড়ুনঃ কিভাবে ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করবেন

সেক্ষেত্রে যদি একটি পরিসংখ্যান করা যায় তাহলে দেখা যাবে বাংলাদেশের প্রায় 70% মানুষ এখন অনলাইনে কেনাকাটা করে। আর আপনি যদি বর্তমান মার্কেটে বা ফেসবুকে খেয়াল করে দেখেন তাহলে দেখতে পাবেন যে বিভিন্ন টি-শার্ট সহ আরো অনেক প্রোডাক্টের এড আপনার সামনে ঘোরাঘুরি করে। ঠিক তাদের মত যদি আপনি আপনার এই প্রিন্টিং সেক্টরকে আরো যথাযথভাবে রূপদান করাতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনার ক্যারিয়ারে আর কোনো বাধা থাকবে না আর আপনি এ ব্যবসায় সফল হবেন। তাই পরিশেষে সকল বিবেচনায় বলা যায় যে বর্তমানে টি-শার্ট পেন্টিং বিজনেস এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে আর আপনি যদি টি-শার্ট প্রিন্টিং বিজনেস করতে চান তাহলে অবশ্যই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং সঠিক সিদ্ধান্ত। 

প্রিন্টিং বিজনেসের ভবিষ্যৎ কেমন

আমরা এতক্ষন বর্তমানে প্রিন্টিং বিজনেস এর চাহিদা কেমন এ সম্পর্কে আলোচনা করেছি। বিভিন্ন বিজনেস রয়েছে যেগুলোর বর্তমান সারা ভালো থাকলেও ভবিষ্যৎ অন্ধকার কিন্তু প্রিন্টিং বিজনেস এর ভবিষ্যৎ অনেক ভালো। বর্তমান পরিসংখ্যান অনুযায়ী 70% মানুষ অনলাইন থেকে কেনাকাটা করে কিন্তু যেহেতু স্মার্টফোনের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে এবং স্মার্টফোনের বেড়ে যাচ্ছে এবং দিনের পর দিন মানুষ আরো আপডেট হচ্ছে তাই বলা যায় যে ৭০% থেকে বেড়ে ১০০% এর দিকে ধাবিত হচ্ছে। তাই প্রিন্টিং বিজনেস নিয়ে বা এর ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। আপনি যদি এখন প্রিন্টিং বিজনেস শুরু করেন ভবিষ্যতে এটিকে একটি ফ্যাক্টরিতে রূপদান করতে পারবেন। তাই স্বল্প পরিসরে বলা যেতেই পারে যে প্রিন্টিং বিজনেস বা প্রিন্ট অন ডিমান্ড বিজনেসের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত সুগঠিত। 

প্রিন্টিং বিজনেস করতে কি কি প্রয়োজন

আপনি যদি প্রিন্টিং বিজনেস করতে চান তাহলে সেক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আপনার মাথায় যে প্রশ্নটি আসতে পারে সেটি হচ্ছে যে প্রিন্টিং বিজনেস করতে কি কি প্রয়োজন হয় বা কি কি লাগে। প্রিন্টিং বিজনেস করার ক্ষেত্রে ভালো মানের বাজেট প্রয়োজন। আর আপনি যদি প্রিন্টিং বিজনেস শুরু করেন সেক্ষেত্রে বেশ কিছু মিশনারি পণ্যের প্রয়োজন রয়েছে। যেমন সাবলিমেশন প্রিন্টার, হিট প্রেস মেশিন, একটি ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার, ক্যামেরা অথবা মোবাইল ফোনের ক্যামেরা হলে হবে। আর এর পাশাপাশি আপনি অনলাইনে মার্কেটিং করার জন্য একটি প্রফেশনাল ফেসবুক পেজ এর প্রয়োজন হবে। যার মাধ্যমে আপনি আপনার কাস্টমার এর রিভিউ নেওয়া থেকে শুরু করে কাস্টমারদের কাছে আপনার প্রোডাক্ট পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত একটি প্রফেশনাল ফেসবুক পেজ সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকবে। আশা করছি আপনি এতোটুকু পড়ার মাধ্যমে বুঝতে পেরেছেন যে প্রিন্টিং বিজনেস বা প্রিন্ট অন ডিমান্ড বিজনেস শুরু করার জন্য আপনার কি কি প্রয়োজন হতে পারে এ সকল বিষয়ে। 

প্রিন্টিং বিজনেস শুরু করতে কত টাকা লাগে

এতক্ষণ আমরা জানতাম যে প্রিন্টিং বিজনেস কি এবং এ বিজনেস কিভাবে করতে হয় এবং করতে কি কি প্রয়োজন রয়েছে। তো চলুন এর পাশাপাশি জানার যাক যে এই পণ্য বা সামগ্রীগুলো কেনার জন্য কত টাকা লাগতে পারে বা প্রিন্টিং বিজনেস শুরু করার জন্য কত টাকার প্রয়োজন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমি এমনভাবে আপনাকে একটা বাজেট দেওয়ার চেষ্টা করব যেটার মাধ্যমে আপনার নিজস্ব মেশিন থাকবে এবং আপনি সম্পূর্ণ নিজে প্রিন্টিং এর সকল কাজ করতে পারেন। সাবলিমেশন হেপ্রেস মেশিন এবং প্রিন্টার সহ এবং প্রিন্টিং সামগ্রী সবকিছু মিলে ৫০ হাজার টাকার মতো বাজেট লাগতে পারে। আর আপনি যদি প্রিন্টের ঝামেলা না করতে চান সেক্ষেত্রে আপনি আরো কম বাজেট দিয়ে মাত্র ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে টি-শার্ট কিনে রেডিমেট ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আশা করছি প্রিন্টিং বিজনেস সম্পর্কে আপনি একটি ক্লিয়ার ধারণা পেয়েছেন এবং আপনার বিজনেস এর সফলতা কামনা করে আজকের পোস্ট এখানেই শেষ করছি আর এই পোস্টটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না ধন্যবাদ। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url